তিতলি: কবিতা, সাহিত্য ও শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন

তিতলি মুভির গল্প নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কারণ ইতিমধ্যে আমাদের সবারই হয়তো তিতলের মাধ্যমে দার্জিলিং এর শিশির ছোয়া হয়েছে। এ যেন এক কবিতা! এ যেন এক সৌন্দর্য মন্ডিত সাহিত্য! যেখানে এক প্রজাপ্রতির মতো বড়ে ওঠা কিশোরি মেয়ে ও তার মায়ের ভালোবাসা, স্নেহ ও আক্ষেপের গল্প বলে! যেখানে মিশে আছে হাজারো পাওয়া না পাওয়ার অদ্ভূত সব স্মৃতি! সত্যি এ যেন এক আশ্চর্য অনূভুতি!

    " এখানে বৃষ্টি থাকে বারো মাস "
               " এখানে গাভির মতো ছড়ে মেঘ........"

তিতলির চিত্রনাট্য সৃষ্টি করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ এবং পাশাপাশি সৃজনও করেছেন। ঋতুর রঙের তো কোনো তুলনা নেই! তিতলিও ঋতুর অনন‍্য সৃষ্টির একটা যা মানুষের হৃদয় ও মননে মিশে গিয়ে সৃষ্টি করেছে অভিমানের।

” মন খারাপের খবর আসে বন পাহাড়ের দেশে “
” চৌকণো সব বাক্সে যেতায় যেমন থাকসে “

  " মন খারাপের খবর আসে দারুণ ভালোবেসে "

তিতলির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব‍্যাপক ভূমিকা রেখেছে অপর্ণা সেন, কঙ্কনা সেনর্শমা ও মিঠুন চক্রবর্তী পাশাপাশি আলো ছড়িয়েছে দীপঙ্কর দে। এনারা সবাই জীবন্ত কিংবদন্তি তাই এনাদের নিয়ে কিছু বলার নেই। শুধু বলতে চাই তিতলির সিনেমাটোগ্রাফি আমার চোখে শান্তি প্রদান করেছে, তিতলির ব‍্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, গান ও অপর্ণা সেনের কন্ঠে কবিতা আমার কানে শান্তি প্রদান করেছে। আর কালার গ্রেডিং এবং ক‍্যামেরার কাজ এতটাই দুর্দান্ত হয়েছে যে, মনে হচ্ছিলো স্ক্রিনের প্রতিটা দৃশ্য প্রতিটা সিকুয়েন্স আমায় গভীরভাবে টানছে! এই নিয়ে তিতলের সঙ্গে আমি দার্জিলিং পাচবার ঘুড়ে এলাম

” বাজার শেষে সদর দোয়ায়, বারান্দাতে আরাম চেয়ার
” চিলতে আলোর বিছানাতে ছোট্ট রোদ্রের ফালি “

” সেথায় এসে মন খারাপের সমস্ত ব‍্যাগ খালি………..!”

তিতলি ঋতুপর্ণের অসাধারণ কৃর্তির একটি অভূতপূর্ব নিদর্শন। তিতলি যেমনি হয়েছে প্রশংসনীয় ঠিক তেমনি পেয়েছে আদর এবং সেই আদরের সূত্র ধরেই ; বোম্বে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ঋতুপর্ণ জিতেনিয়েছ ফিপ্রেসি তথা বিশেষ জুড়ি পুরস্কার। সত্যি বলতে এসমস্ত হৃদয় নিঙরে যাওয়া মুভি গুলোর কোনো রেটিং হয় না। তাই বলবো, যদি কবিতা ভালোবাসুন? যদি সাহিত্য ভালোবাসুন? যদি শিশিরভেজা ফুল ভালোবাসুন? যদি রাগ অভিমান ও স্নেহ ভালোবাসুন? সর্বপরি যদি শিল্প ও শিল্পীকে ভালোবাসুন? তবে তিতলি দেখুন!

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *